নিউজ সোনারগাঁ২৪ডটকম: সোনারগাঁ উপজেলার ১১২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কমিটি গঠন নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছেন স্থানীয় সাংসদ (নারায়ণগঞ্জ-৩) লিয়াকত হোসেন খোকা ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেনের সমর্থরা
এ দুই জনপ্রতিনিধির হস্তক্ষেপের কারণে উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটি গঠনে বিপাকে পড়েছে বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা শিক্ষা অফিস। কমিটিগুলোতে পদ পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন দুই পক্ষের সমর্থকরা। এ নিয়ে গত এক মাসে কয়েকটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে, যা থানা পুলিশ পর্যন্ত গড়িয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভায় এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা।
উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১১৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১টি বিদ্যালয়ের কমিটির মেয়াদ পূর্ণ না হওয়ায় বাকি ১১২টি বিদ্যালয়ের কমিটি (এসএমসি) গঠনের সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষা অফিস। নতুন কমিটি গঠনের জন্য দুই মাস সময় বেঁধে দেওয়া হলেও স্থানীয় সাংসদ (এমপি) লিয়াকত হোসেন খোকা ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেনের হস্তক্ষেপের কারণে কমিটি নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি শিক্ষা অফিস। দুইপক্ষের পছন্দের লোকজন দিয়ে কমিটি করার জন্য ইতিমধ্যে বিদ্যালয়গুলোর প্রধান শিক্ষকরা বেশ চাপে রয়েছেন। এরই মধ্যে উভয় জনপ্রতিনিধির সমর্থিত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে থানায় পাল্টাপাল্টি মামলাও হয়েছে।
উপজেলার ১১২টি বিদ্যালয়ের মধ্যে প্রায় ৭০টি বিদ্যালয়ে কমিটি গঠন নিয়ে এ দ্বন্দ্ব চরম রূপ নিয়েছে।
এরই মধ্যে বারদী ইউনিয়নের পাইকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সভাপতি প্রার্থী নাসির উদ্দিন ও তার সমর্থকদের সঙ্গে প্রতিপক্ষ বিল্লাল হোসেন ও তার সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এছাড়া পিরোজপুর ইউনিয়নের খাসেরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কমিটি নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে দুই জনপ্রতিনিধির টানাপড়েনের কারণে নির্ধারিত সময়ে কমিটি গঠন সম্ভব না হওয়ায় দ্রুত কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে চাইছে শিক্ষা অফিস।
তবে অভিযোগ রয়েছে, বিদ্যালয়গুলোর প্রধান শিক্ষকরাও গঠনতন্ত্র বহির্ভূতভাবে প্রস্তাবিত কমিটির তালিকা উপজেলা শিক্ষা অফিসে পাঠিয়েছেন। নির্বাচনের আগে বিদ্যালয়গুলোতে খসড়া ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও প্রকাশ এবং মনোনয়ন বিক্রির কথা থাকলেও অনেক বিদ্যালয়ে তা করা হয়নি। এ নিয়ে সেসব বিদ্যালয়ের অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নিখিল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘নিয়ম মেনেই কমিটি গঠন করা হবে। তবে দুই জনপ্রতিনিধির পছন্দের ব্যক্তিদের দিয়ে কমিটি গঠন করার জন্য আমরা চাপে রয়েছি।’
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি মোশারফ হোসেন বলেন, যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের সমন্বয়েই কমিটির অনুমোদন দেওয়া হবে।
সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা বলেন, নিয়ম অনুযায়ী বিদ্যালয়ের কমিটি হবে।এছাড়া রাজনৈতিক ভাবে অনেক নেতার লোকই আমার কাছে সভাপতি হওয়ার জন্য ইচ্ছা পোষন করেছে আমি তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী তাদের সভাপতি করার জন্য সুপারিশ করেছি। কাউকে বিমুখ করেনি।